ক্রিপ্টোগ্রাফি (বা Cryptology; গ্রিক κρυπτός Kryptos, “লুকানো, গোপন” থেকে; যথাক্রমে এবং γράφειν graphein, “লেখা”, বা -λογία -logia, “গবেষণা”,) সুরক্ষিত যোগাযোগের কৌশল যা তৃতীয় পক্ষের কাছ থেকে তথ্য সুরক্ষিত রাখার নিমিত্তে ব্যবহার করা হয়। ক্রিপ্টোগ্রাফিতে এই তৃতীয়পক্ষ বিবেচিত হয় প্রতিপক্ষ হিসেবে। সাধারণত, এটা প্রতিপক্ষকে ব্লক করার একধরণের প্রোটোকল নির্মান এবং বিশ্লেষণে সাহায্য করে। এর বিভিন্ন দিক আছে। যেমন , তথ্য গোপনীয়তা, তথ্য অখণ্ডতা, তথ্য নিরাপত্তা ইত্যাদি । মূলত, কোন তথ্য অন্যের কাছ থেকে গোপন রাখার প্রচেষ্টাই ক্রিপ্টোগ্রাফির মৌলিক কথা। যার জন্য তথ্যটি প্রেরিত কিংবা তথ্যের স্বীকৃত মালিক ব্যতিত এর মূল অর্থ কারো কাছে প্রকাশ না করে তথ্য আদানপ্রদানের জন্যেই এই পদ্ধতির উদ্ভাবন।
সুপ্রাচীন কাল থেকেই তথ্যগুপ্তিলিখনের (cryptography) আদানপ্রদান গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে মানবসভ্যতায়, অনেক সময় ইতিহাসের গতিপথই পরিবর্তন করে দিয়েছে তা। ঐতিহাসিকভাবে লিপিবদ্ধ গুপ্তলিখনের প্রথম উদাহরণটি আমরা পাই প্রাচীন মিশরে, আজ থেকে প্রায় চার হাজার বছর পূর্বে। মিশরে তখন দ্বাদশ রাজবংশের সম্রাট দ্বিতীয় আমেনেমহেতের শাসনামল, তার অধীনে উচ্চ মিশরের মেনেত খুফু নগরীর প্রশাসক ছিলেন দ্বিতীয় খনুমহোতেপ। মৃত্যুর পূর্বে নিজের বংশলতিকা, সমরাভিযান ও অর্জনসমূহ চুনাপাথরের পাহাড়চূড়ায় উৎকীর্ণ করে যান খনুমহোতেপ। সমাধিলিপির বিশ্লেষণে রহস্যজনকভাবে পরিলক্ষিত হয়, বর্ণনার শেষাংশে এসে হায়ারোগ্লিফের চিহ্নগুলো বিভিন্ন জায়গায় পাল্টে দিয়েছে খনুমহোতেপের সুবর্ণিকগণ, সুপরিচিত চিহ্নের পরিবর্তে কম প্রচলিত চিহ্ন ব্যবহার করেছে, লঙ্ঘন করেছে ব্যাকরণবিধির।