Hafizul Islam

তাজরিয়ানের মৃত্যু নাকি নিজের তীব্রভাবে বেঁচে থাকতে না পারার শোক

তীব্র ভাবে বাঁচবো বলে লম্বা ম্যারাথানে নেমে পড়েছিলাম বহুদিন আগে। হয়তো সেকারণেই আমার কাছে মৃত্যু অনেক আরাধ্য। মৃত্যুকে আমি পার্টিশনের মতো মনে করি। ছোটবেলায় ঘরের মধ্যে ঘর বানাতে নানুবাড়িতে বোর্ডের দেয়াল তৈরি হয়েছিলো। এপাশ থেকে ওপাশে দেখা যেতো না। কিন্তু, শব্দ আসতো, কথা, হাসির, কান্নার কিংবা অন্ধকারের। মৃত্যু আমার কাছে তেমনই। সময়ের বিস্তৃতি থেকে খাবলা

ইতি অবন্তিকা কিংবা নিজের জন্য লেখা কৈফিয়ত

“ভাই, মেয়েটার নিশ্চয়ই কোনো ঝামেলা আছে। ভিতরে ভিতরে কিছু হইছে। সামলাইতে পারে নাই। আ ত্ম হ ত্যা করছে। ম রে গেছে দেখে এখন ছেলেটা ফাঁসছে। খোঁজ নিয়া দ্যাখেন, কী কী বাইর হয়।” এটা ছিলো আজকে একজনের কাছ থেকে শোনা ডায়লগ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা। উপরের মন্তব্য তাকে নিয়েই করা। অবন্তিকার

my-last-day-at-jamuna-television

৩০ নভেম্বর ২০২৩, যমুনা টেলিভিশনে আমার শেষদিন

যমুনা টেলিভিশনে আমার শেষ অফিস ছিলো ৩০ নভেম্বর ২০২৩। ৬ মাস টিকতে পারবো কিনা এই আশংকা নিয়ে যাত্রা শুরু। তারপর, কীভাবে কীভাবে যেনো এক মাস, দুই মাস করে করে ৩ টা ৬ মাস কেটে গেছে। ছোটবেলা থেকেই আমি বাড়ির বাইরে হোস্টেলে বড় হয়েছি। মায়া কিংবা পিছুটান সামলে নেয়ার অভ্যাস আছে। তারপরও কেনো যেনো মন ভার

কইন্যা’র হাসিমুখ আর ছোট্ট মাকানের জন্য ফৌজি জওয়ানের প্রতীক্ষা

ট্রেনে করে কোলকাতা থেকে ফিরছি বাংলাদেশে। ইন্ডিয়া অংশের বর্ডার গেদে। নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে কোলকাতা থেকে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে পুলিশের একটি বিশেষ শাখা আরপিএফ এর একদল সদস্য। বগি থেকে বগিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাদের অনেকে। কখনো দরকার মনে করলে কাউকে হয়তো কিছু জিজ্ঞাসা করছেন। ট্রেন চলছে ঢিমেতালে। আমার পাশের সিটে কোন যাত্রী নেই। ট্রেনের মন্থর গতি আর ঝিকঝিক

মেয়ে, আমি এখনো তোমার জন্য নিরাপদ বন্ধু আছি কি?

আইরিন আমার প্রথম মেয়ে বন্ধু। তখন বয়স ৫ এর কোটা পেরোয়নি। চিটাগাংয়ে আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের সরকারি কোয়ার্টারে আমাদের বাসা। পাশের ফ্ল্যাটে থাকতো আইরিনরা। ওরা খুব সম্ভবত ২ বোন। আইরিন বড়। কীভাবে আমরা বন্ধু হয়েছিলাম, কখন কবে ওদের সাথে আমার পরিচয়, এতো বছর পরে এসে ইচ্ছা করলেও আর মনে করতে পারি না। মেয়ে বন্ধু আলাদা কিছু,

Elegy for a Brother who Vanished

‘হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল’ ছিলেন কি আমাদের হৃদয় ভাই?

‘হৃদয় ভাই আর নাই! শুনছেন নাকি খবর?’ সহকর্মী মুনীমের ফোন পেয়ে চমকে উঠেছি। বলে কি! হৃদয় ভাই আত্মহত্যা করেছে! এইটা অসম্ভব। মনে মনে বলছিলাম, ‘আরে এমন কিছু হয়নি। একটু পর জানা যাবে, আসল খবর’। ঘুম থেকে উঠে বসে আছি। সোশ্যাল মিডিয়া চেক করছিলাম। আগের দিন ডে অফ ছিলো। বিছানায় বসে বসেই ভাবছিলাম, ছুটি শেষ, বিকালের

why-i-cant-protest-hafizislam

যেভাবে কাটিয়ে দিচ্ছি মেরুদণ্ডহীন ঢ্যাঁড়শমার্কা এক জীবন

সকালে ঘুম থেকে উঠে হঠাৎ মনে হচ্ছিলো, কী যেনো নেই নেই লাগছে। মেরুদণ্ডটা আবার হারিয়ে ফেলেছি। এই নিয়ে হাজারতম বারেরও বেশি সময়ের মতো মেরুদণ্ডটা হারালাম। স্পষ্ট দিনক্ষণ মনে নেই। খুব সম্ভবত যখন ঢাকায় প্রথম আসি, তার কিছুদিন পর আমার হোস্টেলেই ঘটেছিল মেরুদণ্ড হারানোর প্রথম উপলক্ষ্য। কনকনে শীতের রাতে ঘুমাতে যাবো। নতুন বানানো ধবধবে সাদা কভার

death-is-same-everywhere-we-go

বাঁশগাও কিংবা নাখালপাড়া, মৃত্যু সবখানে আমার কাছে একইরকম

আমাদের ছোটমামা অবশেষে মারাই গেলেন। দীর্ঘদিন রোগ ভোগে চলে যেতে হলো। মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানা, বাঁশগাও নিবাসী আবদুল হাকিম মোল্লার ছোট ছেলে আবদুল করিম মোল্লা, আমার ছোটমামা। মৃত্যুকালে তার বয়স কত ছিলো, আমি জানি না। জানার ইচ্ছা হয় নি। নানুবাড়ি আমার কাছে রূপকথার এক রাজ্য ছিলো। বড়মামা, বড়মামী, গল্পবলা বুড়া নানা, ভীষণ আদুরে নানু, বাড়ির সামনে