Hafizul Islam

কৈশোরের প্রিয় চরিত্র..বর্ণহীন বর্তমানে আমার ভালোথাকার বন্ধুরা

ছোটবেলায় সিনেমার হিরো, স্যুপারম্যান,বেন টেন কিংবা অসমসাহসী সিন্দাবাদ হতে চায় নি,এমন কাউকে পাওয়া যাবে না,একথা প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলা চলে।শৈশব-কৈশোরে পরিচিত হওয়া বই-পত্র, সিনেমা কিংবা আমাদের প্রতিদিনের জীবনে থেকে উঠে আসা কিছু চরিত্র, অহর্ণীশ আমাদের হৃদয়ের অতলান্তিক গভীরতায় সযতনে আটকে থাকা আরশিতে ছাপ ফেলে যায়।

 নিজের অজান্তেই আমরা পথ চলি সেইসব প্রিয় চরিত্রগুলো সাথে। আমাদের মনোজগতকে আলোড়িত করা চরিত্রগুলো আমরা তুলে রাখি মনের গোপন বাকসে।ব্যস্ত এই ধাবমান সময়ে নিজেকে সময় দেয়ার মতো সময়ও যখন আমাদের থাকে না, তখন এই চরিত্রগুলো মনের রঙিন বাকসো থেকে বেরিয়ে আসে।পরম মমতায় হাত রাখে আমাদের হাতে।অবিরাম পথ চলার ক্লান্তি মুছে দেয়। আমরা আবার পথে নামি..। এমন কিছু চরিত্র নিয়ে লিখছি আজকে।

কায়কোবাদের ‘আজান’ : কবিতার মোড়কে জাগরণের আবাহন

যমুনার তীরবর্তী ছোট্ট একটি গ্রাম রসপাল। প্রায় ১৩২ বছরের পুরনো ভগ্নপ্রায় মসজিদের ছাঁয়াঢাকা বারান্দায়, বহুকাল আগে লেখা হয়েছিলো একটি অনন্য জাগরণী কবিতা। কবিতাটির নাম ‘আজান’। লিখেছিলেন কায়কোবাদ নামে পরিচিত কাজেম আল কোরায়শী নামক ক্ষনজন্মা এক কবি।

‘‘কে অই শুনালো মোরে
আজানের ধ্বণি
মর্মে মর্মে সেই সুর বাজিল কি সুমধুর
আকুল হইলো প্রাণ বাজিল ধমণী
কি মধুর আজানের ধ্বণি!’’

ড্রোন; একটি যান্ত্রিক ফড়িংয়ের ইতিবৃত্ত

অসীমের করিডোরে পা রাখার দুঃসাহসী ইচ্ছে মানুষের সবসময়ই হয়েছে। ঈকারাসের ডানায় চেপে মানুষর স্বপ্ন পাড়ি দিতে চেয়েছে মহাকাশের সীমানাহীন বিস্তার।ক্রমশ বেড়েছে পৃথিবী নামক সবুজ গ্রহটির বয়স। বেড়েছে সভ্যতার গতিবেগ। প্রযুক্তির পালে হাওয়া লাগিয়ে দ্রুত ধাবমান বর্তমান শতাব্দিতে বিজ্ঞান জন্ম দিচ্ছে অসংখ্য সব বিস্ময়ের। আজকে বলবো তেমনই এক অবাক করা গল্প।শোনাবো ড্রোন নামক এক যান্ত্রিক ফড়িংয়ের ইতিকথা।

শুরুর কথা

১৯৫৯ সাল। আমেরিকান বিমান বাহিনীর গোপন (Classified)এক গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব করে, অদ্ভূত এক বিমান আবিষ্কারের। যার মূল থিম হচ্ছে, পাইলট থাকবে না এই বিমানে। শুরু হলো প্রথম মনুষ্যবিহীন বিমান তৈরীর কাজ। জন্ম নিলো Unmanned Arial vehicle (UAV) আনম্যানড এ্যারিয়াল ভেহিকল বা ড্রোন। ড্রোন শব্দের আভিধানিক অর্থ হল গুঞ্জন। মৌমাছির গুঞ্জনধ্বণি তুলে পথ পাড়ি দেয় বলেই এই নামে ডাকা হয় মানুষ্যবিহীন ড্রোনকে।

ব্লগসাহিত্য; চিরন্তন ক্যানভাসে নতুনের জলছবি

‘ব্লগার মানেই হচ্ছে সময়ের অগ্রবর্তী সত্ত্বা।’ শুরু করছি শ্রদ্ধেয় রণদীপম বসুর উক্তি দিয়ে। ইদানিংকালে ‘ব্লগসাহিত্য’ শব্দটি খুব জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে। প্রযুক্তির কল্যাণে বিভিন্ন মত ও ধারার অনলাইন বাংলা কমিউনিটি তৈরী হচ্ছে। স্বভাবতই এসব কমিউনিটিতে যুক্ত হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। একসময় ব্লগ বলতে শুধু দিনলিপিই বুঝাতো। এখন পাল্টে যাচ্ছে ব্লগের চিরায়ত সংজ্ঞা। ব্লগ হয়ে উঠছে সাহিত্যের শক্তিশালী একটি ধারা।
‘ব্লগসাহিত্য’ সাহিত্য কিনা, সেটা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। হচ্ছেও ঢের। সাহিত্যের সুসংহত এবং নিরপেক্ষ সংজ্ঞা , লিখিত সাহিত্যের দুই হাজার বছরের ইতিহাসে দেয়া সম্ভব হয় নি। কোন্ লেখা সাহিত্যপদবাচ্য, সেটা নিয়ে বিতর্কের ফয়সালা এখনি করা যাবে বলে মনে করছি না। বরং, ইদানিং একটা ওয়ার্কিং ডেফিনেশন ডিফাইনের চেষ্টা করা হচ্ছে। ফিনিশিং টাচ বোধকরি এখানো দেয়ার সময় আসে নি।
সাহিত্য সময়কে ধারণ করে। শব্দের আবরনে জীবনবর্তী সময়ের, অন্তস্থ প্রতিপাদ্য উদঘাটনের ভিন্নতর ডিসকোর্সই সাহিত্য। যদি ব্লগ আমাদের চলমান সময়কে ধারণ করতে সক্ষম হয়- যদি আতীব্র অনুসন্ধানের বেশুমার কম্বিনেশন মিলিয়ে যাপিত জীবনের অন্তর্লোক চিত্রায়ণে মুন্সিয়ানা থাকে ব্লগাশ্রয়ী সাহিত্যের, তাহলে ব্লগের চিরায়ত সাহিত্য হতে বাঁধা কোথায়?