Hafizul Islam

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকের সাথে বেনামী আলাপ

-হ্যালো.. -জ্বী বলুন.. -আমি নীরব বলছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলছেন? -জ্বি বলছি..।  -আমি কি একটু কথা বলতে পারবো? -জ্বি বলুন -আমি আপনাদের সাথে কাজ করতে চাইছি। আরিভার ফান্ডিং নিয়ে। আমি কি পারবো আপনাদের সাথে যুক্ত হতে? -জ্বি পারবেন। আজকে চলে আসুন শাহবাগে। পাবলিক লাইব্রেরীর সামনে। -আপনাকে চিনবো কীভাবে? আমি অবশ্য পাঞ্জাবী পড়া থাকবো। -আমাকে ফোন

যাদুর শহরে ঝাপসা কম্পোজিশনের একটি বিকেল

ফাল্গুণের ১ম দিন বইমেলায় যাবো বলে বের হয়েছি। টিএসসির কাছাকাছি কোথাও অন্তরার সাথে দেখা হবে। তারপর একসাথে বইমেলায়। নীলক্ষেতের মোড় থেকে উপযুক্ত ভাড়ায় রিকশা না পেয়ে হাঁটছি। চারপাশ জুড়ে রঙ বেরংয়ের পোশাক পড়া মানুষজনের ভিড়। ফাগুণের রঙ হিসেবে ক্যাটক্যাটে হলুদ আমার মোটেও ভালো লাগে না। শৈশবের বিরক্তিকর একঘেয়ে জন্ডিসের কথা মনে পড়ে যায়। দেখছি আর

ভিজিটিং প্রিজনার্সে শান্তির ১ টি দিন

আমরা যখন জয়দেবপুর, শিববাড়ি পৌঁছলাম, তখন সন্ধ্যা পেরিয়ে গেছে। আমি, শান, মুনির আমরা ৩ জন ঢাকার বিরক্তিকর জ্যাম আর গরমে সেদ্ধ হয়ে রাজবাগান এসেছি আশফাক ভাইয়ের দাওয়াতে। ভিজিটিং প্রিজনার্স নামে অভিনব পাবলিক ইভেন্ট ওপেন করে আমাদের দাওয়াত করেছেন তিনি। দারুন সুন্দর চারপাশ দেখতে দেখতেই সন্ধ্যার পথে আমরা ঢুকলাম বাসায়। চারদিকে দেয়াল দেয়া গাছপালায় ভরপুর, একতলা

প্লেটভর্তি ভাত আর হাঁসের মাংসে – গ্রামের বাজারে আমাদের একরাত

আমরা সেদিন ছিলাম জীবনানন্দের বরিশালে। ঢাকা থেকে ভোরে এসে নেমেছি লঞ্চে করে। ট্রাভেলার্স অব বাংলাদেশ আয়োজিত রামনাথ বিশ্বাস রাইড – ১ এর সাইকেল ট্যুরে। ৯ জনের একদল ব্যাকপ্যাকার। ফয়সাল ভাই, রাইন ভাই, শরীফ ভাই, মুনিম ভাই, মোহাম্মদ ভাই, মিথুন ভাই, বাহার ভাই, নাইম এবং আমি। সাইকেল আর ব্যাকপ্যাকে ক্যাম্পিংয়ের সব সরঞ্জাম, মাথায় হেলমেট। আমাদের  দেখতে এলিয়েনের মতো

নাস্তার টেবিলের খোঁড়া কাকের জন্য লিখছি

আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিস স্টাফ কোয়ার্টারের জীর্ণ একটি বিল্ডিংয়ে তখন আমাদের বসবাস। মা বাবা আর আমি। বাবা সারাদিন অফিসে থাকেন। কখনো রাতেও বেরিয়ে যান ‘ফায়ার কলে’। আমার রোজকার নাস্তার টেবিলের সঙ্গী ছিলো তখন একদল কাক। নাস্তার সময় কী করে করে টের পেয়ে যেতো ওরা , সেটা আজও আমার কাছে বিস্ময়ের । আমার খারাপ লাগতো না ওদের

একজন ছেলেধরার সাথে হারিয়ে-যাওয়া-আমার একটি বিকেল

আমরা তখন মুন্সিগঞ্জ জেলা সদরের উকিলপাড়া নামক এলাকাতে থাকি। মা, আমি আর ছোটখালা। ভিটেপাকা টিনের দুটি ঘর মিলে একটি বাড়ি। একঘরে আমরা। অন্যটাতে থাকতো আসলাম ভাইয়েরা। আসলাম ভাইদের সাথে পরিচয় এই বাড়িতে আসার পর। আমরা চিটাগাং ছেড়ে চলে এসেছি সবে কিছুদিন হয়েছে। এখানের কিছুই চিনি না। চারদিকে ছেলেধরার খুব উপদ্রব চলছে..। সেকারণে বাড়ির ৬ হাত

আমি গিট্টুর ভাই ‘বলা’ বলছি!

চিটাগাং থেকে বাবার পোষ্টিং তখন ঢাকার সদরঘাট ফায়ার সার্ভিসে। কোয়ার্টার ছেড়ে দিয়ে আমরা উঠেছি নিজেদের গ্রামের বাড়িতে। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়াতে। শৈশবের প্রথম থেকেই আমি বেড়ে উঠেছি শহুরে পরিবেশে। গ্রামের আবহাওয়া, মানুষজন, মাটির নিকানো উঠোন, গরু-মুরগীর হাঁকডাক ইত্যাদিতে তখনো অভ্যস্ত হতে পারি নি। এমনিতেও অবশ্য বুদ্ধিশুদ্ধি কিছুটা কমই আমার। সেকারণেই বোধকরি, সবার কথা ঠিকমতো বুঝতে সময় লেগে

শম্পা ও মৌসুমীকে নিয়ে আমাদের প্রেম অতঃপর…

শম্পা ও মৌসুমীদের বাড়ি তখন আমাদের প্রাইমারী ইশকুলের কাছেই। সাজানো গোছানো পরিপাটি উঠোনের একপাশে ছোটমতো বাগান। কাঠের নকশাকাঁটা টিনের বেড়া আর চৌচালা ঘর, সাথে শানবাধানো পুকুর। স্বচ্ছলতার ছাপ চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। শম্পা আর মৌসুমী পড়তো আমাদের সাথেই। একই ইশকুলে। দুইবোনের মধ্যে শম্পা ছোট আর মৌসুমী বড়ো। ওদের ছোটবেলা কেটেছে ঢাকার কোথাও। তাই, ওদের পোশাক-আশাক,