Hafizul Islam

সুখী কিংবা অসুখী বৃত্তের বাইরে উঁকি দিয়ে আকাশ দেখার একটি দুপুর

আমি ভবঘুরেই হব- এটাই আমার অ্যাম্বিশন আমি কোনে বাউল হব- এটাই আমার অ্যাম্বিশন তবু আমি বোকাই হব- এটাই আমার অ্যাম্বিশন। আমি তুমি সে কিংবা তারা, আমরা কেউই ভালো নেই! আসলেই কি! ভালোথাকা না থাকার মানদন্ড কিংবা বিচারিক গেজেট আমরা কোথায় পেলাম? একজন রাস্তার পাশের চটের দেয়ালে ঢাকা সস্তার হোটেলে স্টীলের থালায় ভরপেট খেয়ে তৃপ্তির ঘুম

প্লেটভর্তি ভাত আর হাঁসের মাংসে – গ্রামের বাজারে আমাদের একরাত

আমরা সেদিন ছিলাম জীবনানন্দের বরিশালে। ঢাকা থেকে ভোরে এসে নেমেছি লঞ্চে করে। ট্রাভেলার্স অব বাংলাদেশ আয়োজিত রামনাথ বিশ্বাস রাইড – ১ এর সাইকেল ট্যুরে। ৯ জনের একদল ব্যাকপ্যাকার। ফয়সাল ভাই, রাইন ভাই, শরীফ ভাই, মুনিম ভাই, মোহাম্মদ ভাই, মিথুন ভাই, বাহার ভাই, নাইম এবং আমি। সাইকেল আর ব্যাকপ্যাকে ক্যাম্পিংয়ের সব সরঞ্জাম, মাথায় হেলমেট। আমাদের  দেখতে এলিয়েনের মতো

নাস্তার টেবিলের খোঁড়া কাকের জন্য লিখছি

আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিস স্টাফ কোয়ার্টারের জীর্ণ একটি বিল্ডিংয়ে তখন আমাদের বসবাস। মা বাবা আর আমি। বাবা সারাদিন অফিসে থাকেন। কখনো রাতেও বেরিয়ে যান ‘ফায়ার কলে’। আমার রোজকার নাস্তার টেবিলের সঙ্গী ছিলো তখন একদল কাক। নাস্তার সময় কী করে করে টের পেয়ে যেতো ওরা , সেটা আজও আমার কাছে বিস্ময়ের । আমার খারাপ লাগতো না ওদের

একজন ছেলেধরার সাথে হারিয়ে-যাওয়া-আমার একটি বিকেল

আমরা তখন মুন্সিগঞ্জ জেলা সদরের উকিলপাড়া নামক এলাকাতে থাকি। মা, আমি আর ছোটখালা। ভিটেপাকা টিনের দুটি ঘর মিলে একটি বাড়ি। একঘরে আমরা। অন্যটাতে থাকতো আসলাম ভাইয়েরা। আসলাম ভাইদের সাথে পরিচয় এই বাড়িতে আসার পর। আমরা চিটাগাং ছেড়ে চলে এসেছি সবে কিছুদিন হয়েছে। এখানের কিছুই চিনি না। চারদিকে ছেলেধরার খুব উপদ্রব চলছে..। সেকারণে বাড়ির ৬ হাত

আমি গিট্টুর ভাই ‘বলা’ বলছি!

চিটাগাং থেকে বাবার পোষ্টিং তখন ঢাকার সদরঘাট ফায়ার সার্ভিসে। কোয়ার্টার ছেড়ে দিয়ে আমরা উঠেছি নিজেদের গ্রামের বাড়িতে। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়াতে। শৈশবের প্রথম থেকেই আমি বেড়ে উঠেছি শহুরে পরিবেশে। গ্রামের আবহাওয়া, মানুষজন, মাটির নিকানো উঠোন, গরু-মুরগীর হাঁকডাক ইত্যাদিতে তখনো অভ্যস্ত হতে পারি নি। এমনিতেও অবশ্য বুদ্ধিশুদ্ধি কিছুটা কমই আমার। সেকারণেই বোধকরি, সবার কথা ঠিকমতো বুঝতে সময় লেগে

শম্পা ও মৌসুমীকে নিয়ে আমাদের প্রেম অতঃপর…

শম্পা ও মৌসুমীদের বাড়ি তখন আমাদের প্রাইমারী ইশকুলের কাছেই। সাজানো গোছানো পরিপাটি উঠোনের একপাশে ছোটমতো বাগান। কাঠের নকশাকাঁটা টিনের বেড়া আর চৌচালা ঘর, সাথে শানবাধানো পুকুর। স্বচ্ছলতার ছাপ চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। শম্পা আর মৌসুমী পড়তো আমাদের সাথেই। একই ইশকুলে। দুইবোনের মধ্যে শম্পা ছোট আর মৌসুমী বড়ো। ওদের ছোটবেলা কেটেছে ঢাকার কোথাও। তাই, ওদের পোশাক-আশাক,

শ্রাবণের রাতে সবজিবোঝাই ভ্যান, ঝুম বৃষ্টি এবং আমার প্রথম উপার্জন

বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে মৌচাক-মালিবাগ সড়ক। রাত তখন ১ টা থেকে ২টা। আমি হেঁটে বেড়াচ্ছি। ঘুরে ফিরছি। রাতের শহর আমার কাছে সবসময়ই অন্যরকম। ভালোলাগার। পড়নে লুঙ্গি আর গেঞ্জি। একটু আগে মালিবাগ পদ্মা সিনেমা হলের কাছে কয়েকজন ট্রাক-শ্রমিকের সাথে ফুটপাতে বসে চা খেয়েছি। হাত-পা ছড়িয়ে বসে গল্প করেছি। শুনেছি তাদের গল্প..। দূরের কোন ছোট্ট গায়ে রেখে আসা আদরের

রাতুলের কপোতাক্ষ নদ কিংবা সাধারণ একটি বাথটাবের গল্প

রাতুলের সাথে আমার প্রথম দেখা হয় জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটির কলাভবনের পাশের রাস্তায়। ঝকঝকে চেহারার ছেলে। চোখের চশমা আর বড়ো ডায়ালের হাতঘড়িতে রীতিমতো স্মার্ট বলা চলে। জীবনের পথচলার ধরণ ভিন্ন হওয়ার কারনেই হয়তো খুব ঝকঝকে চেহারার মানুষদের সাথে আমার একটা অদ্ভূত দূরত্ব থাকে প্রথম থেকেই। কারণ, আমার মনে হয়, আমাকে বুঝতে পারার মতো সময় এবং মানসিকতা তাদের