Hafizul Islam

গগন একটি জলরঙা পোর্ট্রেটের গল্প জানেন

গগন একটি জলরঙা পোর্ট্রেটের গল্প জানেন দূরাগত জাহাজে সফেন সাগরের সন্ধ্যার রঙ তার বহু দিনের চেনা নোনাজলের ঘ্রাণ তার নাকে মুখে শরীরে আস্তরনের মতো লেগে থাকে ইস্তাম্বুলের বাজারে তার সাথে যে নাবিক বসেছিলো খানিকটা সময় আজকাল গগন তাকেও খুঁজে ফেরেন নাজিরাবাজার মোড়ে..। সস্তা ক্যানভাস মোড়কে আটকে পড়া দূরাগত জাহাজ কিংবা তার সংগোপন কান্নার ধ্বনি উড়ে

দূরাগত জাহাজ ও আমাদের অপেক্ষা

‘দূরাগত জাহাজের’ বিদায়ী হুইসেল ও আমাদের অপেক্ষা

আজকাল আমি আকাশের আরতদার হয়েছি.. রুপলাল হাউজের পুরনো মালিক আর্মেনীয় আরানতুনের সাথে আজকাল শ্যামবাজারের মোড়ে পরোটা চা খাই রুপলাল আর রঘুনাথ এখনো সবজি-মসলার কারবারী.. রাতের শতবর্ষ পুরনো বাতাসে বুড়িগঙ্গা থেকে ভেসে আসে ‘দূরাগত জাহাজের’ বিদায়ী হুইসেল..। ‘রুপোর নথ’ আর ‘ধোঁয়াটে চোখ’ নিয়ে যখন গায়ের বধু নেমে দাঁড়ায় ইট-বাধানো বিকেলের রাস্তায় মুগ্ধ প্রকৃতি তখন চমকে উঠে কি?

রোজ তার সাথে আমার মোলাকাত হয়

রোজ তার সাথে আমার মোলাকাত হয় ভেতর বাহির সদর অন্দরে কখনো বিশ্বাস আবার কখনো সংশয় আমাদের মাঝে নিত্য বিনিময় হয়..। আয়নায় আমার পাশে দাঁড়ায় সে ঘুমোতে গেলে বালিশে মাথা রাখে একসাথে প্রতি পদবিক্ষেপে অহেতুক বিদ্রোহ তার সাথে আমার এভাবেই মোলাকাত হয়..। রুপোর থালার মতো চকচকে ভোর কিংবা নাক্ষত্রিক নিজঝুম রাতে আমাদের অবসর মেলে.. তখন অন্ধকারে

ফেরিওয়ালা আজকাল সময় বিক্রি করে!

দিন হাঁটছে পায়ে পায়ে গন্তব্যের নাম নিতাইগঞ্জ রাতের ট্রেনে ফিরছি আমি.. নিজের জন্য একটু সময় এবার কিনেই নেবো বলে। ফিরছি মহাকালের কাছে যেখানে ক্ষণিক বলতে কিছু নেই সেকেন্ড মিনিট ঘন্টার নিক্তিতে সস্তায় ইদানিং সময় কেনা যায় বহুপ্রাচীণ সদরঘাটে? যেখানে কালিদাস আর অঞ্জন দত্ত কীর্তণখোলার পাড়ে বসে কাঞ্চনজঙ্ঘার গল্প করেন। মুকুন্দ দাস আর ক্ষুদিরাম লিখেন মহাকাব্য

চৌরাস্তার বিলবোর্ডে এই আমি কি তোমার আমি?

রাত বাড়ছে আমার চারপাশ জুড়ে জানালার শার্সী গলে চুপচাপ ঢুকে পড়ছে পৌষের হিম.. টুপটাপ ঝড়ছে কুয়াশার দল..। শীতে কাতর রাত পড়ে আছে শহরে.. আমি ভাবছি…। হাঁটছি..। তাকিয়ে দেখছি আয়নায়.. সেখানে কি আমাকে দেখা যায়? এই নিঝঝুম প্রহরে.. আমি ছিলাম না কখনো কোথাও তোমাদের হিসেবের খতিয়ানে.. ডায়েরীর পাতা কিংবা হৃদয়ের অন্দরে তবুও বলেছি নিজেকে, আমি নিশ্চয়

শত মুখোশের অন্য এক আমি

আমি হারিয়ে গেছি কোথায় এবং কখন জানতে পারি নি সেকথা.. এই কোলাহলের জাদুর শহর আমাকে বদলে দিয়েছে..। আসলেই কি তাই!   মুখোশোর পর মুখোশ জমছে চেহারার পরতে পরতে মুখের খোঁজ কোথায় মিলবে, জানো কি কেহ? সিটি কর্পোরেশনের মূর্দা বহিতে আমার নাম উঠে আছে বহুদিন মোড়ের রঙজ্বলা পোষ্টারসাঁটা ষ্টুডিওতে সেদিন গিয়েছিলাম পাসপোর্ট সাইজ ছবির জন্য ফিরতে

এই শহরে এখন আর অতিন্দ্রীলারা থাকে না

এই শহরে এখন আর অতিন্দ্রীলারা থাকে না..
শাখারীবাজারের মোড়েও আর  পিপলুদাকে
দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি না…।
হয়তো ওরা ভালো আছে অন্যকোথাও..।
অন্য চেহারা, অন্য নাম আর অন্য মানুষ হয়..
আমাদের ভিড়ে..

অতিন্দ্রীলাকে দেখেছিলাম প্রথম
কলেজিয়েট হাইস্কুলে, কোন এক শরতের সকালে
বিউটির লাচ্ছি, স্টীমারের হুইসেল, ঘোড়ার গাড়ির টুনটুন
সব কিছু মুছে গেয়েছিলে সেদিন..

জাদুর শহরে সুপ্রাচীন মানবের জন্য প্রতিক্ষা

সকাল থেকে রাতভোর অবধি তিলোত্তমা এই শহরে
একজন মানুষের খোঁজে পথ হাঁটেন অচেনা দেবদূত..
ঠাসবুনোনের এই নাগরিক কংক্রিট জঞ্জালে
কোন একজন মানুষের দেখা নেই ?

গ্রীক পুরাণের দেবতা জিউস কিংবা রামায়ণের কোন সন্ন্যাসীর
অভিশাপে পাথর হয়ে গেছে এই শহরের মানুষেরা?
নাকি, হ্যামিলিয়নের সেই হারানো বাশীওয়ালা
আবার এসেছে নেমে এই যাদুর শহরে..?

“নগরীর বাতাসে এখন ঘাম আর মেকাপের গন্ধ।
সাথে আছে, যানজটে বসে থেকে হেলপারের হাঁকডাক:
এই, শাবাগ, গুলিস্তা, ফারামগেট, মতেঝিল।
ড্রাইভার গুলো যেন একেকজন মিউজিক কম্পোজার!”