Hafizul Islam

১২২ কিঃমিঃ সাইকেল জার্ণি, গিরিশচন্দ্র সেন, একটি হঠাৎ দুর্ঘটনা এবং অন্যান্য

নরসিংদী জেলার মাধবদী। তখন সকাল 9 টা বাজতে 10 মিনিট বাকী..। দিগন্তের কোণ দখল করে কালো হয়ে আসছে আকাশ..। তীব্র বাতাসের ঝাপটায় রাস্তায় ধূলোবালি আর পরিত্যক্ত মোড়কের ঝড় উঠছে..। একটা সাইকেল তখন চলছে বাতাসের বিপরীতে…। মাথা নীচু করে সাঁই সাঁই প্যাডেল করছে আরোহী..। যেতে হবে আরো খানিকটা দূর…। ভোরে ঢাকার বাসাবো থেকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ভেতর দিয়ে বালু নদী পেরিয়ে কাঞ্চন হয়ে চলেছি নরসিংদী সদরের পথে..।

দ্যা ফ্লাইং ডাচম্যান, সমুদ্রের রহস্যময় জাহাজ

দ্যা ফ্লাইং ডাচম্যান (The Flying Dutchman) । পৃথিবীর সামুদ্রিক ইতিহাসের এক বিখ্যাত জাহাজের নাম। হাজার হাজার মাইল বিস্তৃত সাগরের পরিধি যেমন সীমাহীন। তেমনই সীমাহীন এর স্রোত আর ঢেউয়ের পরতে পরতে আটকে থাকা রহস্যের খতিয়ান ।  ফ্লাইং ডাচম্যান হচ্ছে সমুদ্রের এক অজানা রহস্যের নাম, কিংবদন্তির এক ভূতুড়ে জাহাজ। কখনো কোন বন্দরে নোঙ্গর ফেলে না এই জাহাজ। শুধু উত্তাল সমুদ্রেই দেখা মেলে পালতোলা এই সামুদ্রিক জলযানের।

 ভুতূড়ে জাহাজ নিয়ে যত লোককাহিনী প্রচলিত আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত ফ্লাইং ডাচম্যান। এই লোককাহিনীটির উৎপত্তি মূলত ১৭-শতকের সামুদ্রিক লোকাচারবিদ্যা থেকে। প্রাচীন নথিপত্রে এই জাহাজটিকে ১৮-শতকের শেষের দিকের জাহাজ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ব্লগ কিংবা অনলাইন ডায়েরীর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

ডায়েরী বা দিনপঞ্জিকা লেখার অভ্যাস বরাবরই অন্যতম সুন্দর অভ্যাস।সাগর পাড়ি দেয়া নাবিক কিংবা নীল দিগন্তে ভেসে বেড়ানো বৈমানিকরা সেই আদ্যিকাল থেকেই লগবই লিখতেন। তাতে লিখতেন তাদের দৈনন্দিন পথযাত্রার খবরাখবর। সাথে থাকতো নিজেদের একাকীত্ব কিংবা ভাবনার কথা। সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন এসেছে সবকিছুতেই। ডায়েরী লেখার কাজ এখন অনেকেই অনলাইনেই সেরে ফেলেন। এই অনলাইনে নিয়মিত লেখার রেওয়াজকেই বলা হচ্ছে ব্লগ লেখা। এই লেখাটিতে ব্লগের আদ্যোপান্ত সংক্ষেপে লিখতে চেষ্টা করলাম।

প্রারম্ভিকা
ব্লগ শব্দটি ইংরেজ Blog এর বাংলা প্রতিশব্দ, যা এক ধরণের অনলাইন ব্যক্তিগত দিনলিপি বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক পত্রিকা। ইংরেজি Blog শব্দটি আবার Weblog এর সংক্ষিপ্ত রূপ। যিনি ব্লগে পোস্ট করেন তাকে ব্লগার বলা হয়। ব্লগাররা প্রতিনিয়ত তাদের ওয়েবসাইটে কনটেন্ট যুক্ত করেন আর ব্যবহারকারীরা সেখানে তাদের মন্তব্য করতে পারেন।
এছাড়াও সাম্প্রতিক কালে ব্লগ ফ্রিলান্স সাংবাদিকতার একটা মাধ্যম হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিক ঘটনাসমূহ নিয়ে এক বা একাধিক ব্লগার রা এটি নিয়মিত আপডেট করেন।

(Hangzhou হানযৌ) বিশ্বের দীর্ঘতম ট্রান্স-ওশেনিক ব্রীজ; স্থাপত্যকলার অবাক নির্মাণ

আমরা এখন বাস করছি গতিশীল এক পৃথিবীতে। পৃথিবী সবসময়ই গতিশীল ছিলো। সময়ের ধাবমান গতিবেগ প্রকৃতিগত নিয়মেই ছাপ ফেলেছে পৃথিবীর পরিবেশ প্রকৃতিতে। একসময় মানুষের টিকে থাকা নির্ভর করতো, তার সাহস, হিংস্রতা, দুর্যোগ সহনের ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। এখন সময় পাল্টেছে। প্রকৃতির সাথে সহাবস্থানের সাথে সাথে মানুষ দ্রুত শিখে নিচ্ছে প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণের বিদ্যা। অসম্ভব সব কাজ করছে মানুষ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে। তেমনই একটি নিদর্শন নিয়ে আজকের এই লেখা। চীনের হানযৌ ( ইংলিশে Hangzhou। সঠিক উচ্চারনের জন্য ক্লিক করুন) ব্রীজ। সভ্যতার এক অপার বিষ্ময়। বিশ্বের দীর্ঘতম ট্রান্স-ওশেনিক ব্রীজ। সাগরের অলঙ্ঘনীয় বাঁধাকে ডিঙিয়ে চীনের দুটি প্রদেশকে সংযুক্ত করেছে এই ব্রীজ। এর নির্মাণ ছিলো দীর্ঘ দশ বছরের নিরবচ্ছিন্ন পরিকল্পনার ফসল

কৈশোরের প্রিয় চরিত্র..বর্ণহীন বর্তমানে আমার ভালোথাকার বন্ধুরা

ছোটবেলায় সিনেমার হিরো, স্যুপারম্যান,বেন টেন কিংবা অসমসাহসী সিন্দাবাদ হতে চায় নি,এমন কাউকে পাওয়া যাবে না,একথা প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলা চলে।শৈশব-কৈশোরে পরিচিত হওয়া বই-পত্র, সিনেমা কিংবা আমাদের প্রতিদিনের জীবনে থেকে উঠে আসা কিছু চরিত্র, অহর্ণীশ আমাদের হৃদয়ের অতলান্তিক গভীরতায় সযতনে আটকে থাকা আরশিতে ছাপ ফেলে যায়।

 নিজের অজান্তেই আমরা পথ চলি সেইসব প্রিয় চরিত্রগুলো সাথে। আমাদের মনোজগতকে আলোড়িত করা চরিত্রগুলো আমরা তুলে রাখি মনের গোপন বাকসে।ব্যস্ত এই ধাবমান সময়ে নিজেকে সময় দেয়ার মতো সময়ও যখন আমাদের থাকে না, তখন এই চরিত্রগুলো মনের রঙিন বাকসো থেকে বেরিয়ে আসে।পরম মমতায় হাত রাখে আমাদের হাতে।অবিরাম পথ চলার ক্লান্তি মুছে দেয়। আমরা আবার পথে নামি..। এমন কিছু চরিত্র নিয়ে লিখছি আজকে।

একজন চন্দনা কিংবা কংক্রিট শহরের গল্প…পথলিপি

এখন অনেক রাত। দূর থেকে ভেসে আসছে রাতজাগা ডাহুকের আর্তরব। আমার জানালার পাশে দাঁড়ানো গাছটিতে, নীড়ে ফেরা কোন পাখিদের সামান্য আয়োজনের সংসার। আমি লিখছি কংক্রিটের শহর ঢাকা থেকে অনেক দূরের এক মফস্বল শহরের ছোট্ট এক বাড়িতে বসে। ঝিঁ ঝিঁ ডাকছে ঝিমধরানো শব্দে। পৃথিবী ঘুমোচ্ছে নিশ্চিন্তে আকাশের গায়ে মাথা রেখে…। সুগভীর রাত্রির অতলান্তিক নৈঃশব্দ, প্রগাঢ় নিস্তব্ধতায়

কায়কোবাদের ‘আজান’ : কবিতার মোড়কে জাগরণের আবাহন

যমুনার তীরবর্তী ছোট্ট একটি গ্রাম রসপাল। প্রায় ১৩২ বছরের পুরনো ভগ্নপ্রায় মসজিদের ছাঁয়াঢাকা বারান্দায়, বহুকাল আগে লেখা হয়েছিলো একটি অনন্য জাগরণী কবিতা। কবিতাটির নাম ‘আজান’। লিখেছিলেন কায়কোবাদ নামে পরিচিত কাজেম আল কোরায়শী নামক ক্ষনজন্মা এক কবি।

‘‘কে অই শুনালো মোরে
আজানের ধ্বণি
মর্মে মর্মে সেই সুর বাজিল কি সুমধুর
আকুল হইলো প্রাণ বাজিল ধমণী
কি মধুর আজানের ধ্বণি!’’

কাঙাল হরিনাথ; গ্রামীণ সাংবাদিকতার অন্যতম পথিকৃৎ

হরিনাথ, কাঙাল (জন্ম: ১৮৩৩মৃত্যু: ১৬ এপ্রিল, ১৮৯৬)  সাংবাদিক, সাহিত্যিক,  বাউল গান রচয়িতা। বাংলা লোকসংস্কৃতির অন্যতম ধারক ও বাহক হিসেবে পরিচিত বাউল সঙ্গীতের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন। তাঁর প্রকৃত নাম হরিনাথ মজুমদার, কিন্তু কাঙাল হরিনাথ নামেই তিনি সমধিক পরিচিত। কাঙাল ফিকিরচাঁদ বা ফিকিরচাঁদ বাউল নামেও তিনি পরিচিত ছিলেন। ১৮৩৩ সালে  নদীয়া (বর্তমান কুষ্টিয়া) জেলার কুমারখালি গ্রামে তাঁর জন্ম।

প্রারম্ভিক জীবন:-

তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের নদীয়া জেলার কুমারখালীতে (বর্তমান বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলা) জন্মগ্রহণ করেন। খুব ছোটবেলায় তাঁর পিতা-মাতা লোকান্তরিত হন। তাঁর পিতার নাম হরচন্দ্র মজুমদার। বাল্যকালে কৃষ্ণনাথ মজুমদারের ইংরেজি স্কুলে কিছুদিন অধ্যয়ন করেন। কিন্তু অর্থাভাবে প্রাতিষ্ঠানিক বিদ্যাশিক্ষায় বেশীদূর অগ্রসর হতে পারেননি। তবে সারাজীবন অবহেলিত গ্রামবাংলায় শিক্ষাবিস্তারের জন্য ও শোষণের বিরুদ্ধে সংবাদপত্রের মাধ্যমে আন্দোলন করেছেন তিনি। অতঃপর গোপাল কুণ্ডু, যাদব কুণ্ডু, গোপাল স্যান্যাল প্রমূখ বন্ধুদের সাহায্যে ১৩ জানুয়ারি, ১৮৫৫ সালে নিজ গ্রামে একটি ভার্নাকুলার বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন হরিনাথ মজুমদার। এরপর বেশ কিছুদিন ঐ বিদ্যালয়েই বিনাবেতনে শিক্ষকতার মহান পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। পরবর্তীকালে তাঁরই সহায়তায় ২৩ ডিসেম্বর, ১৮৫৬ সালে কৃষ্ণনাথ মজুমদার কুমারখালিতে একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন।