Hafizul Islam

১০০ কি:মি: রাইড এবং একটি ক্রস কান্ট্রি রাইডের প্রস্তুতি

“হারিয়ে গিয়েছি, এইতো জরুরি খবর অবাক দুই চোখে, ছায়া কাঁপে ভয় অভিমানে হারিয়ে যাওয়ার নিয়ম নেই এখানে হারাবো বলে, পা টিপে এগুতে গেলে গোটা শহর বাতি জ্বেলে সতর্ক পায়ে পায়ে হারাবার জায়গা খুজে মরি গোটা শহর বাতি জ্বেলে সতর্ক পায়ে পায়ে হারাবার জায়গা খুজে মরি…” —–সাহানা বাজপেয়ী # হারানোর ইচ্ছেটা আমাদের ভেতরের কোন গহীন অন্দরে

রোজকার কড়চা

আমার জন্য সবার কষ্ট হচ্ছে। প্রিয়তার জন্য আমি মোটেও পারফেক্ট নই। আমি আসলে কারো জীবনেই সাযুজ্যপূর্ণ নই। কিছু মানুষকে হয়তো এভাবেই বেঁচে থাকতে হয়..। জানি না…। কিচ্ছু জানতে ইচ্ছা করছে না। চলে যেতে ইচ্ছা করছে দূরে কোথাও। যেখানে কেউ কারো জন্য নয়…। শুধুই সুমহান মৌনতার অপেক্ষা…

রোজকার কড়চা

রাস্তার পাশে জীর্ণ ভ্যানগাড়ি কিংবা স্টলে আয়োজিত ফুডকোর্টগুলো না থাকলে, আমার মতো ছাপোশা গুরুতর মধ্যবিত্তদের অবস্থা কী হতো, কে জানে…

কোকন ট্রি; এক আধুনিক বৃক্ষনিবাসের আদ্যোপান্ত

মনে করুন, সময় এখন রাত ৩টা বেজে ৩০ মিনিট। আপনি শুয়ে আছেন রুক্ষ পশ্চিমের কোন এক দুর্গম ট্রেইলে। পাশে দাঁড়িয়ে ঘুমোচ্ছে আপনার বিশ্বস্ত ঘোড়া।  কিংবা, ঘুমোচ্ছেন টেক্সাসের কোন এক সুপ্রাচীন র‌্যাঞ্চে। পড়নে কাউবয়ের পোশাক। কেমন হবে ব্যাপারটা? কিংবা মনে করুন, এই বর্তমান কংক্রিট সময়ে আপনি জায়গার অভাবে আবাস গেড়েছেন, দুই বিল্ডিংয়ের মাঝখানের ফাকা জায়গাটুকু দখল

“তবু আমারে দেব না ভুলিতে …” কাজী নজরুল ইসলামের ১১৩ তম জন্মবার্ষিকী

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। ছোটবেলার পাঠ্যবই থেকে ওঠে আসা কিংবদন্তি। আমার এক অসম্ভব প্রিয় চরিত্রের নাম। শুধু আমারই নয়, বরং, বিংশ শতাব্দীর হাজারো বাঙালির কাছে তিনি ছিলেন জনপ্রিয়তম কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, দার্শনিক। বাংলা সাহিত্যে অগ্রগামী ভূমিকার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য যিনি সর্বাধিক পরিচিত। তিনি আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের, প্রিয় জাতীয় কবি। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ – উভয় বাংলাতেই তাঁর কবিতা ও গান সমানভাবে সমাদৃত। তাঁর রচনায়, কবিতায়, গানে, প্রবন্ধ-ভাষণে বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাঁকে বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত করা হয়। তাঁর কলম ছিলো, মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার, প্রভূত্ব, ধর্মের দোহাই দিয়ে অধর্মের চর্চা এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদী।

বাংলাদেশী ডাকটিকেট..হারানো সময়ের গল্পকথক…

ছোট্ট একটা কৌতুক দিয়ে শুরু করছি। কোন এক মৌখিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীকে জিজ্ঞেস করা হলো, ভারতবর্ষে কে ঘোড়ার ডাকের প্রচলন করেন? পরীক্ষার্থী উত্তরে বলেছিলো, যে ঘোড়াটি প্রথম ভারতবর্ষে আসে, সেই ঘোড়াটি নিশ্চয়ই!! উপমহাদেশে ঘোড়ার ডাকের প্রবর্তক কে ছিলেন, সেটা নিয়ে ইতিহাসের নীরস তত্ত্ব অনুসন্ধানের অনুসন্ধিৎসা আমার আপাতত হচ্ছে না। আমি বরং ডাকটিকেট নিয়ে কথা বলি। ডাকটিকেট কিংবা ডাকটিকিট যে ভাবেই বলুন ইংরেজীতে এটাকে Philately বলে। ডাকটিকেট বহুদিন ধরেই ডাকব্যবস্থার একটি প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ। এর আকার যতই ছোট, আবেদন কিন্তু ঠিক ততটা ছোট নয়। আর, বিশেষ দিনক্ষণ, ঘটনা কিংবা বিশেষ উপলক্ষে ছাপানো ডাকটিকেটের বাড়তি ক্বদর তো থাকেই। একটি দেশের ইতিহাস, সামাজিকতা, নৃ-তাত্ত্বিক বিবর্তন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অনেক কিছুই ধারণ করে থাকে এই ডাকটিকেট নামের ছোট্ট কাগজখন্ডটি। ডাকের চিঠিপত্রের কোনায় আঠা দিয়ে সাঁটানো রঙীন ছোট চারকোনা (কোন কোন টিকেট অবশ্য ত্রিভূজাকৃতি এবং গোলও হয়ে থাকে) কাগজটিই ডাকটিকেট।

নির্বাসনের প্রাক-কথন এবং আমার ব্লগীয় জন্মদিন…

আমি হয়তো মানুষ নই,
মানুষ হলে আকাশ দেখে হাসবো কেন ?
মানুষগুলো অন্যরকম, হাত থাকবে,
নাক থাকবে, তোমার মতো চোখ থাকবে,
নিকেলমাখা কী সুন্দর চোখ থাকবে
ভালোবাসার কথা দিলেই কথা রাখবে ।

বাবাকে আমি ভীষণ পছন্দ করতাম। ছোটবেলায় বাবা বলেছিলেন, আরে ধূর..! কাছে আসবি না তো! তোকে না বলেছি, সবসময় দূরে থাকবি..!! আমি দূরেই থেকেছি বাবা..। সেই থেকে আর কখনো তোমার কাছে আসিনি। জানো বাবা, মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে হতো তোমার কোলে মাথা রাখতে। খুব ইচ্ছে হতো ইমন লিমনদের মতো তোমার হাত ধরে ঘুরতে যেতে। কিন্তু, আমি কখনো তোমার কাছে যেতাম না বাবা। তুমি যদি বিরক্ত হও! কি বুঝেছিলাম সেদিন, সেটা আর এখন মনে করতে পারিনা। তবে আর কখনো তোমার কাছে যাইনি। আমি এখন অনেক দূরে চলে গিয়েছি বাবা। অনেক দূরে..। তোমার কাছে কোন প্রয়োজনে যেতাম কখনো সখনো। মা তখন আমাকে বাইরে অপেক্ষা করতে বলতো। সেটাকে তুমি বলতে ওয়েটিং রুম। মাসের খরচের টাকার জন্য তোমার জন্য ওয়েট করতাম। বাবা, আমাকে এখন শুধুই ওয়েটিং করতে হয়। আমাকে এখন ওয়েট করতে হয় সবকিছুর জন্য। আমার চারদিকে এখন অসংখ্য ওয়েটিং রুমের ছড়াছড়ি। আমি আমার প্রিয় মানুষটিকে ভীষণ ভালোবাসি। আমাকে ওয়েট করতে হয় তার একটু সুন্দর হাসির জন্য। তার একটু উচ্ছল আনন্দের জন্য আমাকে বসে থাকতে হয় অনন্তকাল…। আমি ভাবি…। আমার ভাবনার কোন শেষ হতে চায় না। হয়তো এর কোন শেষ নেই বলেই…। প্রিয় মানুষটির সাথে কথা বলবো বলে ফোন দিই। আমার মোবাইলের স্ক্রীণে ভেসে উঠে ওয়েটিং….।

একজন স্ট্রীট ম্যাজিশিয়ান ও রূপকথার জাদুকরের গল্প

জনারণ্যে খুঁজে ফিরি আপনার স্বজন…পথ-লিপি – ২

”দেহেন ভাই, আমার হাতে কয়ডা কার্ড? তিনডা? আমি দেখতাছি চাইরডা। বাইর কইরা দেহান তো…” এভাবেই ঢাকার নগরকর্তার বাড়ির সামনে, ওসমানী উদ্যানের লাগোয়া ফুটপাথের অনাড়ম্বর আর ধুলোমলিন স্টেজে ম্যাজিক দেখাচ্ছিলেন আমার শৈশবের স্বপ্নের জাদুকর হ্যারি হুডিনী। অবাক হলেন তো? অবাক হবারই কথা। বিশ্বের খ্যাতনামা ম্যাজিশিয়ান হুডিনীর কী প্রয়োজন হলো যে, তিনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে শো করবেন!
আমি আসলে গল্প বলছি। ছোট্ট এক কিশোরের গল্প। অশুদ্ধ বাংলায় কথা বলা এক ছোট্ট ম্যাজিশিয়ানের প্রতিদিনকার গল্প। যে জানে না, ম্যাজিক আমাদের সমাজে মনোরঞ্জনের উপকরণ। সে শুধু জানে, অন্তত কয়েকটা ম্যাজিকের সামগ্রী বিক্রি করতে না পারলে তার ছোট্ট বোনটি রাস্তার সস্তা হোটেলেও খেতে পাবে না।
অফিস ফেরৎ আমি দাঁড়ালাম ম্যাজিক দেখবো বলে। একটি শতচ্ছিন্ন ব্যাগে অল্প কিছু পুরোনো ম্যাজিকের উপকরণ, একটা প্লাস্টিকের বস্তা, একটা এনার্জি বাল্ব, মলিন কিছু ছেড়া পোশাক, ছোট্ট এক বোন নিয়েই তার সংসার। মা আছেন কোথাও কাজে। জানতে চাইলাম কী নাম তোমার? নাম দিয়া কাম কী? ট্যাকা দিবেন নাম কইলে? আমি অন্য প্রশ্ন করলাম। তিন কার্ডের খেলাটা কয় টাকা রাখবা? বললো ৫০ টাকা একদাম। বললাম, কার্ডতো পুরোনো হয়ে গেছে। ঝাঁজের সাথে উত্তর দিলো ছেলেটা, নিলে ন্যান, না নিলে রাস্তা মাপেন ভাই। এতো প্যাচালের তো দরকার নাই।