Hafizul Islam

আমি একজন চিন্তাশীল মানুষ

(লেখাটি অন্যরকম গ্রুপের একটি ক্রিয়েটিভ প্রজেক্টের জন্য লেখা। এবং, এই লেখাটি আমাকে প্রজেক্টের শর্টলিষ্টে উঠিয়ে তার সামর্থ্য প্রমাণ করেছিলো। 🙁  পড়াশোনা/পরিক্ষার ক্যাচালে ওয়ার্কশপটা করা হলো না। )

চিন্তা, বিচিন্তা, দুশ্চিন্তা কিংবা বিষম চিন্তা যেটাই হোক সেই ছোটবেলা থেকেই মস্তিষ্কের অন্দরে স্বয়ংক্রিয় হয়ে উঠেছিলো এই বোধটি। প্রতিদিন দুটো করে কুকিজ খেতে দিয়ে যখন মা বলতেন অচিনপুরের কোন এক ঈগল পাখির গল্প, যে আমার জন্য দুটো্ করে কুকিজ রেখে যায়, তখন ভাবতাম কোথায় সেই পাখিটির দেশ? কেমন সে দেশের মানুষ? সেখানের শিশুরা কি দুটো কুকিজ খায় নাকি আরো বেশি? আমার ভাবনার রেলগাড়ি তখন থেকেই চলতে শুরু ।

হোস্টেলে বড়ো হবার সুবাদে নিজের চারপাশে রাশি রাশি বইয়ের স্তুপ নিয়ে বেড়ে উঠেছি।বইয়ের পাতায় পাতায় অসংখ্য মানুষ, অসংখ্য জীবন, ফেলে আসা অসংখ্য অতীত আর চলিষ্ঞু বর্তমানের অজস্র চরিত্রের সাথে হাতে হাত রেখে এগিয়ে গিয়েছে আমার চিন্তারা।রবীন্দ্রনাথের ফটিক থেকে শুরু করে শরৎএর শ্রীকান্ত কিংবা হালের টোকন ঠাকুর সবাই আমাকে ভাবায়। সকালের সূর‌্যটা যখন কুয়াশায় মুখ ঢেকে উঁকি দেয়, তখনও আমি ভাবি।

ড্রোন; একটি যান্ত্রিক ফড়িংয়ের ইতিবৃত্ত

অসীমের করিডোরে পা রাখার দুঃসাহসী ইচ্ছে মানুষের সবসময়ই হয়েছে। ঈকারাসের ডানায় চেপে মানুষর স্বপ্ন পাড়ি দিতে চেয়েছে মহাকাশের সীমানাহীন বিস্তার।ক্রমশ বেড়েছে পৃথিবী নামক সবুজ গ্রহটির বয়স। বেড়েছে সভ্যতার গতিবেগ। প্রযুক্তির পালে হাওয়া লাগিয়ে দ্রুত ধাবমান বর্তমান শতাব্দিতে বিজ্ঞান জন্ম দিচ্ছে অসংখ্য সব বিস্ময়ের। আজকে বলবো তেমনই এক অবাক করা গল্প।শোনাবো ড্রোন নামক এক যান্ত্রিক ফড়িংয়ের ইতিকথা।

শুরুর কথা

১৯৫৯ সাল। আমেরিকান বিমান বাহিনীর গোপন (Classified)এক গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব করে, অদ্ভূত এক বিমান আবিষ্কারের। যার মূল থিম হচ্ছে, পাইলট থাকবে না এই বিমানে। শুরু হলো প্রথম মনুষ্যবিহীন বিমান তৈরীর কাজ। জন্ম নিলো Unmanned Arial vehicle (UAV) আনম্যানড এ্যারিয়াল ভেহিকল বা ড্রোন। ড্রোন শব্দের আভিধানিক অর্থ হল গুঞ্জন। মৌমাছির গুঞ্জনধ্বণি তুলে পথ পাড়ি দেয় বলেই এই নামে ডাকা হয় মানুষ্যবিহীন ড্রোনকে।

ব্লগসাহিত্য; চিরন্তন ক্যানভাসে নতুনের জলছবি

‘ব্লগার মানেই হচ্ছে সময়ের অগ্রবর্তী সত্ত্বা।’ শুরু করছি শ্রদ্ধেয় রণদীপম বসুর উক্তি দিয়ে। ইদানিংকালে ‘ব্লগসাহিত্য’ শব্দটি খুব জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে। প্রযুক্তির কল্যাণে বিভিন্ন মত ও ধারার অনলাইন বাংলা কমিউনিটি তৈরী হচ্ছে। স্বভাবতই এসব কমিউনিটিতে যুক্ত হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। একসময় ব্লগ বলতে শুধু দিনলিপিই বুঝাতো। এখন পাল্টে যাচ্ছে ব্লগের চিরায়ত সংজ্ঞা। ব্লগ হয়ে উঠছে সাহিত্যের শক্তিশালী একটি ধারা।
‘ব্লগসাহিত্য’ সাহিত্য কিনা, সেটা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। হচ্ছেও ঢের। সাহিত্যের সুসংহত এবং নিরপেক্ষ সংজ্ঞা , লিখিত সাহিত্যের দুই হাজার বছরের ইতিহাসে দেয়া সম্ভব হয় নি। কোন্ লেখা সাহিত্যপদবাচ্য, সেটা নিয়ে বিতর্কের ফয়সালা এখনি করা যাবে বলে মনে করছি না। বরং, ইদানিং একটা ওয়ার্কিং ডেফিনেশন ডিফাইনের চেষ্টা করা হচ্ছে। ফিনিশিং টাচ বোধকরি এখানো দেয়ার সময় আসে নি।
সাহিত্য সময়কে ধারণ করে। শব্দের আবরনে জীবনবর্তী সময়ের, অন্তস্থ প্রতিপাদ্য উদঘাটনের ভিন্নতর ডিসকোর্সই সাহিত্য। যদি ব্লগ আমাদের চলমান সময়কে ধারণ করতে সক্ষম হয়- যদি আতীব্র অনুসন্ধানের বেশুমার কম্বিনেশন মিলিয়ে যাপিত জীবনের অন্তর্লোক চিত্রায়ণে মুন্সিয়ানা থাকে ব্লগাশ্রয়ী সাহিত্যের, তাহলে ব্লগের চিরায়ত সাহিত্য হতে বাঁধা কোথায়?